এসএসসি-২০২২ পরীক্ষার্থীদের জন্য ৪র্থ সপ্তাহের এ্যাসাইনমেন্ট প্রকাশিত হয়েছে।
ব্যবকলন একাডেমি এর পক্ষ থেকে আজকে আমরা তোমাদের বাংলা ৪র্থ সপ্তাহে অ্যাসাইনমেন্ট এর সমাধান দিব।
(১নং) কবি আব্দুল হাকিমের মাতৃভাষা গ্রন্থ রচনা করার কারণ বর্ণনা:
কবি আব্দুল হাকিম সাধারণ মানুষকে সাহিত্য পাঠের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য কাব্য রচনা করেছেন।
যে ভাষা সাধারণ মানুষের বোধগম্য নয়, সে ভাষায় সাহিত্য রচনা করলে তা বুঝা যায় নায়।
ফলে তারা সাহিত্য পাঠ আনন্দ থেকে বঞ্চিত হয়। তৎকালীন সময়ে আরবি-ফারসি ভাষায় পুস্তক রচিত হতো বলে তা সাধারণ মানুষ বুঝতে পারতো না।
কবি সকল সাধারণ মানুষের জন্য মাতৃভাষায় কাব্য রচনা করেছেন যাতে তারাও সাহিত্য পাঠ করতে পারে।
বাংলাভাষী মানুষের জন্য বাংলায় গ্রন্থ রচনা করাই উত্তম। সাহিত্য রচনা করেই লেখক সাধারণ মানুষের সাথে নিজ মনে সংযোগ ঘটান।
সাহিত্য রচনা ভাষা যদি সাধারণের বোধগম্য না হয় তবে মনের সংযোগ সম্ভব নয়।
কবির মতে, সাধারণ মানুষের জন্য মাতৃভাষায় রচিত কাব্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী।
এ কারণে কবি মাতৃভাষা তথা বাংলায় গ্রন্থ রচনা করতেন।
(২ নং) মাতৃভাষা বিদ্বেষীদের প্রতি কবির মনোভাব তুলে ধরা হলোঃ
কবি তার কবিতায় বাংলা ভাষা বিদ্বেষীদের দেশ ত্যাগ করার উপদেশ দিয়েছেন।
অনেক মানুষই আছে, যারা বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে অথচ বাংলা ভাষার প্রতি তাদের কোনো মমতাবোধ নেই।
এদের বংশ ও জন্ম পরিচয় সম্পর্কে কবির মনে সন্দেহ জাগে। এসব মাতৃভাষা বিদ্বেষীদের প্রতি কবির প্রচন্ড ক্ষেভ।
স্বদেশ থেকে যারা স্বদেশের প্রতি বীরাগ তারা প্রকৃতপক্ষে দেশ ও দেশের ভাষার প্রতি মমত্বহীন।
কবি তাদের এরূপ হীন মনোভাব লক্ষ্য করে ব্যার্থিত হয়েছেন।
শিকড়হীন পরগাছা প্রকৃতির এসব মানুষের প্রতি তীব্র ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করতেই তিনি বলিষ্ঠ কন্ঠে তাদের দেশ ত্যাগের উপদেশ দিয়েছেন।
(৩নং) সাধারণ কথোপকথন, বইপত্র, সাইনবোর্ড, ব্যানার, সংবাদ ও গণমাধ্যম ইত্যাদি ক্ষেত্রে ভাষার অপপ্রয়োগ দৃষ্টান্তগুলো নিন্মে উপস্থাপন করা হলোঃ
বাংলার দামাল ছেলেরা মায়ের ভাষা বাংলায় ভাব প্রকাশের অধিকার আদায়ে বুকে তাজা রক্ত দিয়েছিলো।
ভাষা হিসেবেও সেই গৌরব বয়ে বেড়াতে পারছে বাংলা।
এত ত্যাগ তিতিক্ষা তবুও দেশের সর্বত্র বাংলা ভাষা চালু করা সম্ভব হয় নি।
মাতৃভাষা ব্যবহারে দক্ষিণ কোরিয়া অন্যদের জন্য অনন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে।
সাধারণ কথোপকথন:
সাধারণ কথোপকথন এর মাধ্যমে বাংলা ভাষার চরম বিকৃত হয়েছে।
কথায় আছে এক দেশের বুলি অন্য দেশের গালি।
এক অঞ্চলের ভাষা কোন অঞ্চলের মানুষ তা সহজে বুঝতে পারে না।
অথচ একই দেশে বসবাস করি। বিভিন্ন অঞ্চলে ভ্রমণ করলে দেখা যায় মাতৃভাষার বিভিন্ন রূপ।
আজ বাংলা ভাষাতে হিন্দি, নেপালি, তিব্বতিয় ও ইংরেজি ভাষার সংমিশ্রণ।
যার প্রভাবে আসল মাতৃভাষার শব্দগুলো এখন বিলুপ্তির পথে।
বইপত্র:
বর্তমানে বিভিন্ন গল্প, উপন্যাস ও কবিতায় বিভিন্ন বিদেশি ভষার শব্দের সংমিশ্রণ দেখা যায়। এছাড়াও পাঠ্য পুস্তকে বানানে সঠিক ব্যকরণ রীতি অনুসরণ করা হয় নাহ। মানুষ বানান এখন লেখা হয় মানুস। পশ্চিমবঙ্গের বাংলা ভাষা বানান এখন আমাদের ভাষায় প্রবেশ করেছে যা আমাদের কাম্য নয়। বিদেশি ভাষায় প্রভাবে আমাদের দেশীয় ভাষার শব্দগুলো বইপত্র ক্রমেই কমে যাচ্ছে।
সাইনবোর্ড, ব্যানার:
সাইনবোর্ড, ব্যানারে বাংলা ভাষার ব্যবহার দেখানো চোখ কপালে ওঠার মতন। যারা ব্যানার লেখেন তারা না জেনে বাংলা ভাষার ব্যকরণ রীতি, না জেনে ভাষার সঠিক অর্থ। ব্যানার ভাষার বানান দেখলে মনে হয় না যে এগুলা বাংলা ভাষার শব্দ। বিভিন্ন বিদেশী শব্দের পাশাপাশি বাংলা শব্দগুলো বাংলায় লেখা হয়। যা দেখে মনে হয় যে বিদেশি ভাষার শব্দ গুলো বাংলা ভাষার সন্তান। দৃষ্টিনন্দন কুড়িল ফ্লাইওভারের একদিকে সাইনবোর্ডে ফ্লাইওভার বদলে লেখা হয়েছে ফ্রাইওভার। দেশের চারিদিকে ছড়ানো বিভিন্ন ফ্লাইওভারের দিক নির্দেশক গুলো এমনভাবে ভুল বানান দাঁড়িয়েছে যা দেখে অবাক হওয়ার সঙ্গে, লজ্জা ও পেতে হয়। ২০ থেকে ৩০ গজের মধ্যে একক বানান একেক রকম।
সংবাদ ও গণমাধ্যমে:
কিছু দেশীয় সংবাদ পত্রগুলো বানান রীতি অনুসরণ করলেও স্থানীয় পত্রিকাগুলো তাদের ইচ্ছে মতো ভাষার শব্দ ও বানান লিখতে দেখা যায়। যা সবার কাছে বোধগম্য নয়।ইংরেজি শব্দ গুলো এখন বাংলা শব্দে পরিনত হয়েছে যেমন মোবাইল -ফোন, এফএম রেডিও, টেলিভিশন ইত্যাদি। এছাড়াও বাংলা ভাষার অপব্যবহার বিভিন্ন সাহিত্যে, চলচ্চিত্রে, নাটকে,গানে, সংবাদপত্রে দেখা যায়। এছাড়াও বাংলা ভাষার অপব্যবহার আরো অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়।
৪ নংমাতৃভাষার প্রতি অপপ্রয়োগ কমাতে এবং যথাযথ প্রয়োগ বাড়াতে একক বা দলগতভাবে যে ধরনের ভূমিকা রাখা যায় এ বিষয়ক একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হলোঃ
ভাষার মর্যাদা ও অধিকার সমুন্নত রাখতে গেলে সবক্ষেত্রে প্রয়োজন ভাষা পরিকল্পনা। ভাষার ঐতিহাসিক মর্যাদা রক্ষা ছাড়া জাতীয় উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হয়। যে ভাষা নতুন অর্থ প্রদান করতে সক্ষম, যে ভাষা মানুষের বাসনাকে ধারণ করে, যে ভাষা নতুন জ্ঞান ও প্রন্জ্ঞাকে প্রকাশ করে চিন্তা ও চেতনা কে মিলাতে পারে, সে ভাষার লালন প্রাসভিক।
অন্যদিকে অফস-আদালত, কর্মক্ষেত্রে ব্যবহারিক বাংলা ভাষার শুদ্ব প্রয়োগ নিশ্চিত করার জন্য দরকার সরকারি আগ্রহ উদ্যোগ। সরকারি বেসকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পন্যের বিজ্ঞাপনে ভাষা প্রয়োগের ক্ষেত্রে অসচেতনতা বা ইচ্ছে করে ভাষার অপপ্রয়োগ এর প্রবনতা পরিহার করতে হবে। 'সার্বজনীন বাংলা ভাষার প্রয়োগ' আইন প্রণয়নের পাশাপাশি প্রত্যেক শিক্ষিত নাগরিককে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই শহীদের রক্তে অর্জিত মাতৃভাষা বাংলা তার প্রাণ ফিরে পাবে।
এরকম অ্যাসাইনমেন্টের পেতে চাইলে নিচে ব্যবকলন একাডেমির
YouTube channel subscribe করে রাখ!!
Post a Comment