𝐀𝐛𝐫𝐚𝐡𝐚𝐦 𝐃𝐞 𝐌𝐨𝐢𝐯𝐫𝐞 (𝟐𝟔 𝐌𝐚𝐲, 𝟏𝟔𝟔𝟕 - 𝟐𝟕 𝐍𝐨𝐯𝐞𝐦𝐛𝐞𝐫, 𝟏𝟕𝟓𝟒)
আব্রাহাম
ডি ময়ভার ছিলেন একজন ফরাসি গণিতবিদ।
তিনি প্রধানত জটিল সংখ্যা ও
ত্রিকোণমিতির উপর দেয়া উপপাদ্যের
জন্য বিখ্যাত যা "De Moivre's
Formula" নামে পরিচিত। তিনি-ই প্রথম
যিনি ত্রিকোণমিতি ও কাল্পনিক সংখ্যার
জগৎ কে এক সূত্রে
বেধেছিলেন।
আব্রাহাম
ময়ভারের লেখাপড়া শুরু হয় ধর্মশিক্ষা
দিয়ে। তার বাবা ড্যানিয়েল
ময়ভার ছিলেন একজন শল্য চিকিৎসক।
বাবা ছেলেকে ধর্মশিক্ষা দেওয়ার জন্য তাকে ধর্মীয়
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করিয়ে দেন। ১১ বছর
বয়সে তার বাবা তাকে
সেদানের "প্রোটেস্টেন্ট একাডেমি" তে ভর্তি করান
যেখানে তিনি দীর্ঘ ৪
বছর গ্রীক ভাষা শিক্ষা নেন
যা পরবর্তীতে তার গণিত চর্চায়
কাজে লাগে। ১৫ বছর বয়সে
যখন "প্রোটেস্টেন্ট একাডেমি" ভেঙে যায় তিনি
তখন যুক্তিবিদ্যা শেখায় মনোনিবেশ করেন। তবে সবথেকে মজার
ব্যাপার হলো, "তখন পর্যন্ত তিনি
গণিতের ধারের কাছেও নাই কারণ তার
লেখাপড়ার বিষয়বস্তুতে গণিত ছিলো না"।
হঠাৎ
একদিন এক ধর্মগুরু কর্তৃক
লিখিত গণিতের উপর একটি বই
কোনোভাবে তার হস্তগত হয়
এবং তিনি সেটা পড়া
শুরু করেন। তার বইটি পড়ে
এত ভালো লাগে যে
এর পর থেকে সময়
পেলেই তিনি গণিত সম্পর্কিত
বই পড়তে থাকেন এবং
এভাবেই গণিতের প্রতি তার ভালোবাসা জন্ম
নেয়।
সময়ের
সাথে এভাবেই তিনি ক্রমেই গণিতে
পান্ডিত্য অর্জন করে ফেলেন। গণিতের
সম্ভাবনা তত্ত্ব (Probability Theory),
সাধারণ বন্টন (Normal Distribution) সহ কয়েকটি ক্ষেত্রে
তার অবদান অপরিসীম। ত্রিকোণমিতি ও জটিল সংখ্যা
নিয়ে কাজ করার আগেই
তিনি সম্ভাবনা তত্ত্ব নিয়ে দুটি গবেষনা
প্রকাশ করেন। সম্ভাবনা তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে
তিনি "The
Doctrine of Chances" নামে
একটি বই ও রচনা
করেন৷ এই বইটিতে তিনি
"Normal Distribution ", "Binomial Distribution",
"Central Limit Theorem" সম্পর্কে
আলোচনা করেন। সম্ভাবনা রেখা (Probability Curve) এর আবিষ্কর্তা তিনি।
তিনিই সর্বপ্রথম ফিবোনাচ্চি রাশিমালার "Binet's
Formula" আবিষ্কার
করেন। বীমা সম্পর্কিও গণিতেও
তার অবদান আছে। বীমার অংকের
উপর ভিত্তি করে তিনি একটা
বই ও রচনা করেন
যার নাম হলো, "Annuities on Lives"।
তিনি
এতটাই গণিতপ্রেমী হয়ে উঠেছিলেন যে
জীবনের শেষ দিনগুলোতেও তিনি
গণিত চর্চায় মগ্ন থাকতেন। তার
মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি
সম্ভাব্যতা নিয়ে পড়াশুনা করে
গিয়েছেন। তার মৃত্যুর পরেও
গণিতের উপর কয়েকটি গবেষণাপত্র
প্রকাশিত হয়।
তবে
একটা কথা প্রচলিত আছে,
"তিনি নাকি জীবনের শেষ
দিকের সময়ে প্রচুর ঘুমকাতুরে
হয়ে পড়েন। প্রয়োজনীয় ঘুমের পরেও ঘণ্টার পর
ঘণ্টা ঘুমাতেন। তিনি হিসেব করে
তার মৃত্যুর ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তিনি একদিন পরপর
১৫ মিনিট করে বেশি ঘুমাতেন।
তিনি বলেছিলেন, ১৫ মিনিট করে
করে যখন মোট ঘুমের
পরিমাণ ২৪ ঘণ্টা হবে
তখন তার মরণ হবে।
তার কথা সত্যি করে
দিয়ে ১৭৫৪ সালের ২৭
নভেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন"।
Post a Comment